প্রথমে আমার পরিচয়টা দিয়ে নিই, আমি অনিরুদ্ধ অধিকারী। বর্তমানের চালু টপিক "লিনাক্সদেশ" প্রজেক্টটি আমি শুরু করেছিলাম। আসলে বলতে হয় আমি শুরু করতে বাধ্য হয়েছিলাম। সেই সঙ্গে জেনে রাখা ভালো বর্তমানে আমি রাইফেলস পাবলিক কলেজে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত।
========== যারা লিফোর সদস্য ছিলেন তারা জানেন লিফোতে মাঝে দুয়েকটা "কালো ভেড়া" কি করেছিল। তার পরিণতিও আমরা জানি। লিফো বন্ধ হয়ে যাবার পর লিনাক্স ব্যবহারকারীরা সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে, সাহায্য পাবার একটুকুনও ঠাঁই বাকি ছিল না। আমি রাসেল ভাইকে কতবার ফোন করে বলেছিলাম লিফো চালু করতে, তা আমি, উনি এবং আমার মোবাইল অপারেটর জানে। কিন্তু, তিনি তা করতে চাননি। পরে একরকম জেদ করেই উনার সঙ্গে যোগাযোগ করাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম, প্রচন্ড রাগ হয়েছিল ওনার ওপর, আর হবেই না কেন? যে লিফোতে আমার ব্রাউজারের হোমপেজ সেট করা ছিল, স্কুল থেকে বাসায় ফিরেই যে সাইটের "সক্রিয় টপিক" লিংকে ক্লিক করতাম, সেটি থেকেও নেই! আমি ফেসবুকে চ্যাটে আস্তে আস্তে বুঝতে পারি, ব্যবহারকারীরা ফেসবুক চ্যাটে ঠিকভাবে সাহায্য পাচ্ছে না। ফেসবুকে কয়েকটা গ্রুপও ছিল, কিন্তু গ্রুপের কন্টেন্ট তো আর গুগলে সার্চ করে পাওয়া যায় না। যখন রাসেল ভাইকে বার বার বলার পর দেখলাম উনি চালু করবেন না, আমি সিদ্ধান্ত নিই নিজেই আবার কমিউনিটিকে কিকস্টার্ট মারার। তবে, আমার পরিকল্পনা যে সফল হয় নি তারই পরিচয় আজ লিনাক্সদেশের আস্থা নিয়ে গুরুদের সংশয়। আমি যখন ফোরামটি নতুন করে চালু করতে চাই, তখন আমাকে ডোমেইন ও হোস্টিং বাবদ দুই হাজার টাকা খরচ করতে হয়েছিল। স্কুলের ট্রান্সপোর্ট থেকে নাম কাটিয়ে, ইন্টারনেট সংযোগের স্পীড কমিয়ে ও আমার পুরনো পিসি ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনগুলো দোকানে বিক্রি করে সে অর্থ যোগাড় করি। একদিন, সাহস করে PunBB নামক ফোরাম ইঞ্জিন দিয়ে ফোরামটি চালু করি, এবং কমিউনিটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বড় ভাইদের সন্ধানে বের হই। পরে গুগল মারফর জানতে পারি, অধিকাংশ ভাইয়েরা আপ্র তে আছেন। ওখানে গিয়ে আমি একটি পোস্ট দিই এবং চেনা, জানা ভাইয়াদের একটা করে মেইল ড্রপ করি। কিন্তু, আমার কাজের ধারায় কোন সমস্যার কারণে আমি আপ্রতে স্প্যামার হিসেবে চিহ্নিত হই, এবং ফোরামের হেডারে বড় করে লিনাক্সদেশের স্প্যামিং নিয়ে নোটিশ সাটানো হয়। একজন কিশোরের কাছে এ ধরণের একটা ধাক্কা কতটা আবেগপ্রবণ হয়ে ধরা দিতে পারে, তা হয়তোবা আপনাদের বুঝতে খুব একটা সমস্যা হবে না। আমি অফিসিয়ালী একজন স্প্যামার হলাম, ফেসবুকে অনেকেই আমাকে অপমান করল, কিন্তু তার পরেও কয়েকজন মানুষ আমার ডাকে সাড়া দিলেন। সবার প্রথমে ফোরামে নিবন্ধিত হন আশিকূর নূর ভাইয়া, এরপর আসেন রিং, রাব্বি হোসেন, অনুপদা, আশিফ শাহো সহ আরও অনেকে। কিন্তু, যেসকল বড় ভাইকে (নাম উল্লেখ করছি না) আমি সত্যিকার অর্থে ফেলুদার মত করে দেখতাম, তাদের কেউই আমাকে কিছু বলেননি, সরাসরি কোন সাহায্যে এগিয়ে আসেননি, এমনকি ইমেইলের কোন প্রত্যুত্তরও দেননি। এত সব ধাক্কার পরেও আমি সরে যায় নি, এ পর্যায়ে আসার পরেও আমাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য আমার বাল্যবন্ধু হিরককে ধন্যবাদ। আমি বুঝতে পারলাম, লিনাক্সদেশের জন্মই হয়েছে স্প্যামের মধ্য দিয়ে! জন্মই তার আজন্ম পাপ, এ পাপের জন্যই হয়তোবা বড় ভাইয়েরা "ইগো" রক্ষার্থে আসতে চাচ্ছেন না। ততদিনে ফোরাম ইঞ্জিন, ফোরামের চেহারা সবই অদল বদল হয়ে গিয়েছে। আমি আশিকূর নূর ভাইয়াকে বললাম বড়দের আবার অনুরোধ করতে, আমি আমার কৃতকর্মের জন্য পাবলিকলি ক্ষমা চেলাম, তাতেও হলো না। যে কমিউনিটির জন্য কয়েকমাস টানা কষ্ট করেছি, এত অপমান সহ্য করেও সামনে এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখেছি, সে কমিউনিটি আমাকে প্রত্যাখান করেছে। এমনকি অনেকে এও বলেছেন, লিনাক্সদেশ চালু করবো বলে লিফো বন্ধ করার পেছনে আমি নাকি কাজ করেছি! হায় বিধাতা! আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি, লিনাক্সদেশের সঙ্গে জড়িত হবার জন্য কমিউনিটির বড় ভাইদের কাছে আমি রীতিমত কাকুতি মিনতি করেছি। আমার কাছে যারা ছিল এই কমিউনিটির হিরো, তাদের কেউই সাড়া দেয়নি। সাড়া দিয়েছিল আশিকূর নূর, ইচ্ছে ঘুড়ি, জামাল উদ্দিন এবং রিং ভাই। আমি জানি, আশিকূর নূর এবং রিং ভাইয়ের প্রতি অনেকেরই অজানা এ্যালার্জি আছে, (দ্বিতীয় ব্যক্তিটির প্রতি আমিও সত্যিকার অর্থে খুশি নই) তবুও, তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, আর কেউতো দাঁড়ায়নি! (উবুন্টু বাংলাদেশের শাহরিয়ার তারিক ভাই আমাদের একজন পরামর্শক, তিনি সম্প্রতি নিবন্ধন করেন এবং আমার এ অনুরোধটি রাখেন।) এই প্যারায় আমার কথার সারাংশ হল, লিনাক্সদেশ লিফো মার্জ সংক্রান্ত একটি টপিকে এক বড়ভাই বলেছেন ফোরামটি একটি বিশেষ সংগঠনের নিয়ন্ত্রণাধীন বলে মনে হয়। একটা কথা না বললেই নয়, প্রশাসনের ছয় জনের মধ্যে দুইজন একটি বিশেষ সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। পূর্বের বলা কথাটি আবারও বলছি, কেন আমার হিরোরা সাড়া দেয়নি? আমি বাংলায় বরাবরই A+ মিস করি, কিন্তু কি জানি, কি করে এত বড় একটা মেইল লিখে ফেললাম! মনের কথাগুলো অনেকসময় কালো মেঘের মত জমাট বাঁধে, ছেড়ে না দিয়ে উপায় থাকে না। হয়তোবা তাই এতকিছু লিখেছি। কেউ মনে কষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখিত। কমিউনিটির মারামারি দেখে মনটা হাজারীবাগের উন্মুক্ত ড্রেনের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া কালো পানির ঢেউয়ের মত হয়ে গেছে। -- Ubuntu Bangladesh https://lists.ubuntu.com/mailman/listinfo/ubuntu-bd