ছোট্ট একটা কথা বলি:

আমার অফিসে যত ডকুমেন্ট লেনদেন হয় সবই প্রিন্টেড অথবা অনলাইন সিস্টেম। জ্বী আমি
ইউনিভার্সিটিতে পড়াই। আমার কাজ প্রশ্ন করা, ছাত্রদের লেকচার নোট দেয়া, তাদের
টেবুলেশন তৈরী করা, গ্রেড সাবমিট করা।

আমার মেশিনে উইন্ডোজ নাই। লিনাক্স থেকেই প্রিন্ট দেয়া যায়। আর অনলাইন গ্রেড
সাবমিশন এবং স্টুডেন্টদের কোর্স রেজিস্ট্রেশন ব্রাউজার ভিত্তিক পদ্ধতি। এটা আগে
ফায়ারফক্সের জন্য অপটিমাইজ করা ছিল না। তবে এর মূল ডেভেলপার নিজেই উবুন্টু
চালায়, এবং সম্প্রতি ম্যাক কিনেছে বলে এই সমস্যাগুলো সমাধান করে ফেলেছে।

   - ছাত্রদের ক্লাসে প্রেজেন্টেশন দিতে হলে, পেনড্রাইভ থেকে ওখানের মেশিন বুট
   করে তারপর দেখাই। (ওখানে দেখেই কয়েকজন ছাত্র আমার কাছ থেকে মিন্ট নিয়ে গেছে,
   অবশ্য ওরা লাইব্রেরীতে উবুন্টু ব্যবহার করে অভ্যস্থ)
   - ছাত্রদের সফট কপি দিতে হলে পিডিএফ বানিয়ে দেই।
   - প্রশ্নপত্র প্রিন্টারে ছাপা হয়, তারপর ফটোকপি হয় - কাজেই এখানে চিন্তা
   নাই।
   - টেবুলেশনটাও প্রিন্টারে ছাপা হয়, তারপর রেজিস্ট্রারে জমা হয়।
   - আর গ্রেড সাবমিশন অনলাইনে - এটা ব্রাউজারভিত্তিক সিস্টেম। সাবমিশনের পর
   একটা প্রিন্ট কপি নিতে হয় - সেটা প্রিন্টার অনায়েসেই উবুন্টু থেকে প্রিন্ট করে।
   - কেউ আমাকে ফাইল পাঠালে সেটা আমার পড়তে সমস্যা হয় না। আমি ওদের পাঠযোগ্য
   ফরম্যাটে কনভার্ট করে পাঠাই - তবে জানিয়ে দেই আমি লিনাক্স ব্যবহার করি, তাই
   ১০০% নাও ঠিক থাকতে পারে।

আমার বাসায় উবুন্টু চলে, প্রিন্টার নাই। তাই কিছু প্রিন্ট করতে চাইলে সেটা
পিডিএফ বানিয়ে প্রিন্টের দোকানে নেই। এখন পর্যন্ত সমস্যা হয় নাই। তবে পেনড্রাইভ
পিসিতে ঢুকিয়ে ওরা যখন এন্টিভাইরাস দিয়ে চেক করা শুরু করে সময় নষ্ট করে তখন
বিরক্ত হলেও দাঁত বের করে বলি অযথা সময় নষ্ট করছেন - বাসায় গিয়ে উল্টা আমারই
চেক করতে হবে আপনার এন্টিভাইরাস ঠিক আছে কি না। ;-)

তবে সবার অফিসের কাজের ধরণ এক না। তাই সবাই এভাবে কাজ করতে পারবে না। তবে আমি
ভাবছি, আমার জায়গায় আরেকজন হলে কী করতো?
- এর উত্তরটাও আংশিকভাবে পেয়েছি। অন্য একজন ফ্যাকাল্টির রুমে একটা পিসিতে মিন্ট
ইনস্টল করে সেখানে প্রিন্টার সেট করে দিয়েছিলাম (এটা আইটির লোকজন পারে না ;-)
)। তো... সেই কলিগ চাকুরী ছেড়ে বিদেশেও চলে গিয়েছে। অন্য নতুন কলিগ জয়েন করেছে।
আমি ওটার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে লিনাক্স জরীপে আমার নতুন কলিগের নাম
দেখে হঠাৎ বুঝতে পারলাম এটা সেই মেশিন। ঐ নতুন কলিগ আগে থেকে কিছু না জেনেও
অনায়েসে ওটা দিয়ে কাজ করছে - চিনিনা বা জানিনা জন্য আইটিকে সেটা পরিবর্তন করতে
বলেনি। পরে আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কোনো সমস্যা হয় কি না -- ও বলেছে 'না
তো'!!
- কারণটাও সাধারণ, কারণ ও কোনো স্পেশাল সফটওয়্যারের (অটোক্যাড বা
ইঞ্জিনিয়ারিংএর অন্য কোনো সফট) উপর নির্ভরশীল নয়।
- আইটির সিস্টেম এডমিন বলেছে যে, লিনাক্স পিসিগুলো থেকে সাধারণত কোনোরকম
কম্প্লেইন আসে না (ভাইরাস ইত্যাদি)।
- মাঝখানে আমাদের লাইব্রেরীর ৫টা পিসি আবার এক্সপিতে হিজরত করেছিল। কারণ ছিল
থিন ক্লায়েন্ট করার সময় ভেন্ডর ওদেরকে এইভাবেই শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। প্রথম মাস
দেড়েক ভাল চললেও এরপর প্রতি তিনদিনে ওটা ক্র্যাশ করতো।  সমস্যা হল এতে একটা
ক্লায়েন্ট ক্র্যাশ করলে পাঁচটা ক্লায়েন্টই অচল হয়ে যায়। আমি উবুন্টুতে থিন
ক্লায়েন্ট আছে বলে সিস্টমে এডমিনকে এর উইকিপেজের লিংকসহ মেইল দেয়ার পর সে এটাকে
উবুন্টু দিয়েছে দুই সপ্তাহ হল। এখন পর্যন্ত সমস্যাবিহীন ভাবে চলছে।

এই ছোট কথাটা বলার উদ্দেশ্য হল যে, কর্পোরেট নিজে পরিবর্তন না হলেও কিন্তু আমরা
অনেক ক্ষেত্রেই ওখানে লিনাক্স ব্যবহার করতে পারি। কর্পোরেট আমাদের মত মানুষদের
সমন্বয়েই তৈরী -- কাজেই মানুষ পরিবর্তন হলে কর্পোরেটও পরিবর্তন হতে সাহস পাবে।
সবাই হয়তো কাজের ধরণের জন্য পারবে না, কিন্তু অনেকেই পারবে।

- শামীম
Mobile phone: +8801731 216 486
Homepage <http://sites.google.com/site/mmhzaman/home> ; ব্লগসমূহ: পরিবেশ
প্রকৌশলীর প্যাচাল <http://hussainuzzaman2.blogspot.com/> ; খিচুড়ী
ব্লগ<http://hussainuzzaman.blogspot.com/>;
সচলায়তন <http://www.sachalayatan.com/hussainuzzaman>
-- 
Ubuntu Bangladesh
https://lists.ubuntu.com/mailman/listinfo/ubuntu-bd

Reply via email to